১৮ অক্টোবর ২০১৬ (মুন্সিগঞ্জ নিউজ ডেস্ক) : পদ্মা সেতু চালুর প্রথম দিন থেকেই চলবে রেল। সে লক্ষ্য নিয়ে সরকার ইতোমধ্যে দ্রুত কাজও শুরু করা হয়েছে। এজন্য শিগগির একটি নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। এর আওতায় ঢাকা থেকে মংলা পর্যন্ত রেল সংযোগ স্থাপন করা হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪ হাজার কোটি টাকা।
আগামী দ্বিতীয় সপ্তাহে এ বিষয়ে একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেওয়া হতে পারে। এ বিষয়ে রেল ও অর্থ মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এ প্রকল্পের জনবলের অনুমোদনের জন্য ইতিমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ে এক জরুরী বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে।
মূল সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মোহাম্মদ আবদুল কাদের এসব তথ্য দিয়ে জানান,পদ্মা সেতুতে রেললাইন স্থাপন করা হবে। মূলত দুই ধাপে এই সংযোগ রেলপত্র নির্মাণ করা হবে। প্রথম ধাপে ফরিদপুরের ভাঙা থেকে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করা হবে। আর দ্বিতীয় ধাপে নির্মিত হবে ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত রেলপথ।
তিনি আরো বলেন, পদ্মা সেতুর রেললাইনের কাজ শেষ হলে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে রাজধানীর দ্রুত যোগাযোগ স্থাপিত হবে। মাত্র ৩-৪ ঘণ্টায় এ পথে খুলনা থেকে ঢাকা আসা যাবে। এছাড়া এই রেলপথের মাধ্যমে বাংলাদেশ এশিয়ান আঞ্চলিক রেলপথের সঙ্গে যুক্ত হবে।
এদিকে, ২০১৮ সালে পদ্মা সেতু দিয়ে গাড়ি চলাচলের কথা রয়েছে। ওই সময়ে রেল চলাচল শুরু করতে চায় সরকার। বাংলাদেশ ও চিন দু’দেশের মধ্যে জি টু জি পদ্ধতিতে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। প্রকল্পের কাজ করার জন্য চিন সরকার তাদের দেশের চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি চূড়ান্ত করেছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে একটি কারিগরি প্রকল্পের অধীনে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
ঢাকা-মংলা রেলওয়ে প্রকল্পে ২৩ কিলোমিটার ফ্লাইওভার হবে। কমলাপুর থেকে সায়দাবাদ পর্যন্ত সাধারণ লাইন হবে।
এরপর বুড়িগঙ্গা হয়ে দুই ধলেশ্বরী নদী পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার ফ্লাইওভার হবে। এর মধ্যে এক ও দুই নম্বর সার্ভিস এরিয়ায় মূল সেতু, নদী শাসন প্রকল্প ও সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা থাকছেন।
৩ নম্বর সার্ভিস এরিয়ায় থাকার ব্যবস্থা হয়েছে সেনা কর্মকর্তাদের। আপাতত এই ৩টি সার্ভিস এরিয়া দেশি বিদেশি প্রকৌশলী, বিশেষজ্ঞদের আবাসন এবং গবেষণার কাজে ব্যবহার করা হলেও এগুলোকে ঘিরেই পদ্মার দু’পাড়ে গড়ে উঠছে পর্যটন সম্ভাবনা। বিশেষ করে ২ নম্বর সার্ভিস এরিয়াটিকে পুরোপুরি গড়ে তোলা হচ্ছে পর্যটনবান্ধব করে। ৩ টি সার্ভিস এরিয়া নির্মাণে সার্বিক তদারকি করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেতুর কাজ শেষ হলে ৭৭ হেক্টর এলাকা জুড়ে নির্মিত ২ নম্বর সার্ভিস এরিয়ায় পর্যটকদের জন্য থাকবে আবাসনের পাশাপাশি আধুনিক সব সুবিধাই।
চলতি মাসের মধ্যেই নির্মাণকাজ শতভাগ শেষ করে সার্ভিস এরিয়াগুলো সেতু বিভাগের হাতে হস্তান্তর করবে সেনাবাহিনী।