নাজির হোসেন ও তুষার আহমেদ ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, মুন্সিগঞ্জ নিউজ ডটকম:
মুন্সিগঞ্জ শ্রীনগরে ধর্ষনের পর যুবতীকে হত্যার আলোচিত প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করেছে শ্রীনগর থানা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানাযায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে রবিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে গাজীপুর টঙ্গি উপজেলার মরপুর এলাকা থেকে লিমা হত্যার প্রধান আসামী বাবুলের ছেলে খোকন (৩০) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করার পর আসামী খোকন স্বীকারোক্তিমূলক ১৬৪ (ধারা) জবান বন্দি দিয়েছে আদালতে।
এ বিষয়ে সোমবার বিকেলে মুন্সিগঞ্জ পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে বাড়ৈখালী বাজারের চাঁন সুপার মার্কেটের পিছনে ইছামতি নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে বাড়ৈখালী গ্রামের মতিনের মেয়ে লিমা আক্তার (১৮) এর লাশ উদ্ধার করে শ্রীনগর থানা পুলিশ।
এ ঘটনার পর হতে হত্যা মামলার প্রধান আসামী বাবুলের ছেলে খোকন পলাতক ছিল। ঘটনার পর থেকে পলাতক আসামী গ্রেফতার করার জন্য থানা পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করে আসছিল।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল খন্দকার আশফাকুজ্জামান, শ্রীনগর সহকারী পুলিশ সুপার (সদর) রাজিবুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) নাজমুল রায়হান, ডিআই-১ মো: নজরুল ইসলাম,
ডিবির অফিসার ইনচার্জ এস.এম আলমগীর হোসেন, এ সময় প্রেসক্লাবের নির্বাহী সদস্য লাবলু মোল্লা, মাসুদ রানা, মুন্সিগঞ্জ অনলাইন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, সহ- সভাপতি আবু হানিফ রানা, কার্যকরি সদস্য কায়সার সামির, সাংস্কৃতিক বিষয়ক নাজির হোসেনসহ প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে জানা যায়, মেয়েকে বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে দৌহিক সম্পর্ক তৈরী করে আসামী খোকন। কিন্তু মেয়ে যখন জানতে পারে খোকন বিবাহিত ও সন্তান রয়েছে তখন হত্যাকারী খোকনকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং টাকা দাবী করে।
দোকানে কাপড় কিনতে যায় বলে বাড়ি থেকে বের হয়। সেই সুবাধে মেয়েটি ঘটনার দিন দুপুরে খাবার নিয়েও আসে এক সাথে খাবারও খায়। রাতে যখন মার্কেটটি নিরব হয়ে যায় তখন সার্টার বন্ধ করে তারা দুইজনে দোকানের ভিতরে রাতযাপন করে। সারারাত দৌহিক মিলনে লিপ্ত হয়।
এই সুযোগে মেয়েটি মেয়েটি ৩০হাজার টাকা দাবী করে। দাবীকৃত টাকা না দিলে তার সাথে যা যা হয়েছে সকল কিছু লোকদেরকে বলে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে। পরবর্তীতে খোকন ও লিমার মধ্যে হাতাহাতি হয় এক পর্যায়ে গলাটিপে হত্যা করে ফেলে।
লিমার মৃত্যু হয়েছে নিশ্চিত হলে লাশ দুই দিন দোকানের ভিতরেই রাখে। দুর্গন্ধ যাতে না আসে এজন্য খোকান বিলিসিং পাউডার দিয়ে দুর্গন্ধমুক্ত রাখে। পরে লাশ পঁেচ যাওয়া শুরু করলে লাশ গুম করার জন্য বস্তা বন্দি করে ইছামতি নদীর তীরে বস্তাবন্দি লাশ ফেলে দিয়ে আসে।
গত কাল রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্রীনগর সার্কেল মাকসুদা লীমার নেতৃত্বে শিক্ষানবিশ এএসপি রাশেদুল ইসলাম, শ্রীনগর থানার তদন্ত ওসি মাসুদুর রহমানসহ পুলিশের একটি টিম তাকে গ্রেফতার করে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্রীনগর সার্কেল মাকসুদা লীমার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ঘটনার পর পরই আমাদের পুলিশের কয়েকটি টিম আসামীকে গ্রেফতারের জন্য ঢাকার লালবাগ, কেরানীগঞ্জ,গাজীপুর এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করছিলেন। অবশেষে গাজীপুর থেকে ধর্ষনের পর হত্যার আসামী খোকনকে আমরা গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি।